csb24.com::
প্রকাশক দীপন হত্যাসহ ব্লগারদের ওপর আক্রমণকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন। আজ রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে যৌথভাবে এ দাবি জানান ড. বদিউল আলম মজুমদার ও এম হাফিজউদ্দিন খান। বিবৃতিতে তারা বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে মুক্তমনা লেখক ও ব্লগারদের একের পর এক হত্যা করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার হত্যার উদ্দেশে নৃশংস জোড়া হামলা চালানো হয় ঢাকায় দুই প্রকাশক এবং আরও দুই কবি ও ব্লগারের ওপর।
বেলা আড়াইটায় লালমাটিয়ায় প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে প্রথম হামলার খবর পাওয়া যায়। যখন আক্রান্তদের নিয়ে চিকিৎসা চলছিলো এমন সময় শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটে আরেক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে এ প্রতিষ্ঠানের মালিক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে রক্তাক্ত ও নিহত অবস্থায় পাওয়া যায়। দুই ক্ষেত্রেই হামলার পর প্রতিষ্ঠান দুটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
তারা আরো বলেন, এ আক্রমণ শুধুমাত্র ব্যক্তি ফয়সাল আরেফিন দীপন এর ওপরই নয়, মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা তথা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপরেও আক্রমণ। ফয়সাল আরেফিন দীপন এর বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশিষ্ট লেখক আবুল কাশেম ফজলুল হক। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অধ্যাপক অজয় রায় এর ছেলে ও বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক অভিজিৎ রায়কে একইভাবে হত্যা করা হয়। সেই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকেই এখনো পর্যন্ত আটক করতে পারেনি পুলিশ।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে আমরা জানতে পারি যে, অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক হওয়ায় ফয়সাল আরেফিন দীপন ও আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুল ছিলেন হামলাকারীদের মূল টার্গেট। একের পর এক লেখক ও ব্লগার হত্যায় নাগরিক হিসেবে আমরা গভীরভাবে ক্ষুব্ধ, মর্মাহত এবং শঙ্কিত। আমরা আরও উদ্বিগ্ন যে, এর আগে যে পাঁচ জন ব্লগারকে হত্যা করা হয়েছিলো, সে সকল ঘটনার এখনো পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য তদন্ত বা অগ্রগতি হয়নি। সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, পরমত সহিষ্ণুতা ও সহনশীলতার চর্চা ব্যতীত এ ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড রোধের আর কোনও বিকল্প পথ নেই।
আমরা আরও মনে করি, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা কেবল আইন-শৃঙ্খলাজনিত বিষয় নয়, এরকম হত্যাকাণ্ড ও ঘটনা আমাদেরকে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়েই মোকাবিলা করতে হবে। আমরা সুজন সুশাসনের জন্য নাগরিক-এর পক্ষ থেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একইসঙ্গে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দুস্কৃতিকারীদের খুঁজে বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাই।
পাঠকের মতামত